মিঠাপুকুর প্রতিনিধি।।
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ৭ নং লতিবপুর ইউনিয়নের জায়গীরহাট ঈদুল পুরে আশ্রয়ন প্রকল্পের ৭৮ টি ঘর নির্মানের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই। কিন্তু গৃহহীনদের এসব ঘর নির্মান করতে গিয়ে শুরু থেকেই উপজেলা প্রশাসনকে হিমসিম খেতে হচ্ছে। ভূমিদস্যুদের কালো থাবায় বার বার ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ঘরের অবকাঠামো। বাঁধা আর প্রতিকুলতা পেরিয়ে গৃহহীনদের জন্য নির্মিত এসব ঘরে গৃহহীনরা যখন বসবাসের স্বপ্ন দেখছিলেন,তখন রাতের আঁধারে ঘরগুলো ভেঙে ঘরের দরজা,জানালা, ইট,রড চুরি করে নিয়ে গিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এমনকি ঘর ভেঙে ঘরের জমি দখল করে আবাদি জমি বের করে সীমানা নির্ধারণ করার চেষ্টা করছে ভূমিদস্যুরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,শনিবার(২৮-সেপ্টেম্বর) নির্মানাধীন ঘরগুলোর একাংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। যেগুলোর কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে সে ঘরগুলির কয়েকটির দরজা,জানালা খুলে নিয়ে গিয়েছে। ল্যাট্রিনের রিংগুলো ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান,আপনাদের আমরা কিছু বলতে পারবোনা। আপনাদের কিছু বলতে গেলে ভূমিদস্যু মন্টু মিয়া, চান মিয়া, রবিউল, হামিদুল, বাদশা গং- তাদের গুন্ডা বাহিনী আমাদের উপর লেলিয়ে দিবে। তাদের দাবি,ভূমিদস্যুরা স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা তোজাম্মেল প্রিন্সিপালের নিকট আত্মীয়-স্বজন হওয়ায় আওয়ামী লীগ সরকারের সময় থেকে যে,প্রভাব বিস্তার করেছে, সরকার পতনের পরেও অদ্যবধি পর্যন্ত আশ্রয়ণের সরকারি সম্পত্তি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
স্থানীয়রা জানান, মিঠাপুকুর উপজেলাকে শতভাগ গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করার লক্ষে উপজেলা প্রশাসন চলমান বছরে ২ একর ৩৮ শতাংশ জায়গায় এখানে ৭৮ টি আশ্রয়নের ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু আশ্রয়নের ঘরগুলি নির্মাণের শুরু থেকেই ভূমিদস্যুদের কারনে বারবার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হোঁচট খেতে হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত- ০৫ আগষ্ট সরকার পতনের সূযোগে ভূমিদস্যু গ্রুপটি দলবল নিয়ে আবাসনের ঘরগুলো ভেংগে দিয়েছিলো। যাঁরা কাজ করেছিল তাদের মারপিট করে বিতাড়িত করা হয়েছে। সে সময়ে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর প্রচেষ্টায় পূনরায় কাজ এগিয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু গত কয়েক দিনে অব্যাহতভাবে সেগুলো ভেঙে লুটপাট ও চুরি করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা উপস্থিত না হলেও তাদের পক্ষে ৫০/৬০ জন নারী আশ্রয়ন প্রকল্পে অবস্থানরত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, এখানে যেই আসবে তাদের মাথা ফেলে দেওয়া হবে। এমনকি সরকারি কর্মকর্তাদের আশ্রয়ণে দেখা গেলে পরিনতি ভয়াবহ হবে বলে সাংবাদিকদের হুমকি দেন।
এ বিষয়ে মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিকাশ চন্দ্র বর্মণ জানান, ভূমিদস্যুরা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে আশ্রয়ণের ঘরের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। ঘর ভাংচুর সহ ৪০ থেকে ৪৫ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ঊদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। সরকারি কাজে বাধা ও সরকারি সম্পদ বিনষ্ট কারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।