পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় পানি নিষ্কাশনের নেট ভেঙে দিয়ে এক মৎস্য খামারের অন্তত ১৫ লাখ টাকার মাছ বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েকজন কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী মৎস্য চাষী রাজীব কুমার বকশীসহ স্থানীয়রা। সোমবার দুপুরে উপজেলার চন্দনবাড়ি ইউনিয়নের মদনহার এলাকায় ওই মৎস্য খামার সংলগ্ন রাস্তায় তারা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী রাজীব কুমার বকশী জানান, ৯ একর জমির পুকুরে তিনি দীর্ঘদিন ধরে মৎস্য খামার করে মাছ চাষ করে আসছেন। এলাকার মানুষের ফসলি জমির পানি যাতায়াতের জন্য একটি নালাও করে দিয়েছেন তিনি। তার পুকুর সংলগ্ন কালভার্টের সামনে তিনি লোহার নেট দিয়েছেন যাতে মাছ পালিয়ে যেতে না পারে। তবে পানি যাতায়াত ছিলো স্বাভাবিক। কিন্তু একদল দুর্বৃত্ত কালভার্টের অপরপ্রান্তে খড় ঢুকিয়ে দিয়ে উজানে পানি বৃদ্ধি করে। এরপর গত ৬ জুলাই তারাই আবার লাঠিশোঠা নিয়ে এসে কাউকে না জানিয়েই কালভার্টের সামনে থাকা পানি নিষ্কাশনের নেটটি খুলে ফেলে। সাথে সাথে পুকুরে থাকা অর্ধেক মাছ বেড়িয়ে যায়। এর প্রতিবাদ করতে গেলে হুমকি দেয়া হয় তাদের।
রাজীব কুমার বকশী বলেন, চন্দনবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের নির্দেশে পাশর্^বর্তী জোড়পাকুরী এলাকার মিঠুন রায়, হাসান আলী, লুৎফর রহমান, নুরুজ্জামান, সাজু, হাবিবুর, ফরিদুল, তোফাজ্জল, সবুজ, মচু, রবিউল, আনারুল লাঠিশোঠাসহ তাদের লোকজন নিয়ে আমার পুকুর সংলগ্ন কালভার্টের পানি নিষ্কাশনের নেটটি ভেঙে দেয়। এতে প্রায় ১৫ লাখ টাকার মাছ বের করে দিয়েছে। আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। চিন্তুায় ঘুমাতে পারছিনা। কোন কারণ ছাড়াই তারা আমার অনেক বড় ক্ষতি করেছে। তারা সবাই কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরে। আমি এর প্রতিবাদ করেছি বলে আক্রাশমূলকভাবে তারা আমার এই ক্ষতি করেছে। আমি থানায় লিখিত অভিযোগও করেছি। আমি চাই তাদের দৃষ্টান্ত শাস্তি হোক এবং আমার এই ক্ষতিপূরণ যেন দেয়া হয়।
তার ভাই রাজেশ কুমার বকশী বলেন, পঞ্চগড় অনেক উঁচু এলাকা। এখানে বন্যা হয় না। অতিবৃষ্টি হলে সাময়িক জলাবন্ধতা দেখা দেয়। তাও দুই তিনদিনেই পানি সরে যায়। যারা মৎস্য খামারের সাথে থাকা পানি নিষ্কাশনের নেটটি ভেঙে ফেলেছে তাদের জমিতে কোন ফসল ছিলো না। কোন ক্ষয়ক্ষতিও হয় নি। উদ্দেশ্যমূলকভাবে তারা পুকুরের মাছগুলো বের করে দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বদিউজ্জামান রনি বলেন, তারা অমানবিক কাজ করেছে। মৎস্য খামারের মালিককে না জানিয়ে এভাবে তার ক্ষতি করা ঠিক করেনি। কোন সুস্থ মানুষ এমন কাজ করতে পারে না।
চন্দনবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম প্রধান বলেন, উনি কি বলে বলুক। ওই কালভার্টে পানি যাওয়া বন্ধ থাকায় স্থানীয়দের ক্ষতি হচ্ছিল। তারা গিয়ে ভেঙে দিয়েছে।