নিজস্ব প্রতিবেদক।।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে পাশবিক
অত্যাচারে নিহত তোফাজ্জেলের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১২ টায় লাশ বরগুনার পাথরঘাটার চরদুয়ানী নিজ বাড়িতে পৌঁছলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। শত শত মানুষ রাতেই মৃত তোফাজ্জেলের বাড়িতে ভির জমান এক নজর দেখার জন্য। সকাল ১০টায় হাজারো শোকাতুর মানুষের উপস্থিতিতে জানানা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা মায়ের পাশেই আদরের ধন তোফাজ্জেলকে দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) চোর সন্দেহে ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে আটক করে বরগুনার চরদোয়ানী বাজারের তোফাজ্জেলকে। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মানসিক ভারসাম্য হারানো তোফাজ্জেল পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দি কলেজ থেকে অনার্স মাস্টার্স শেষ করেন। ছাত্র জীবনে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ২০১১ সালে তোফাজ্জেলের বাবা সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান, ২০১৩ সালে মা বিউটি বেগম লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন এবং একমাত্র বড় ভাই পুলিশে চাকুরী করতেন। তিনিও লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরিবারে রয়েছে বড় ভাইয়ের স্ত্রী ও দুটি সন্তান।
এলাকাবাসী ও সহপাঠীবন্ধুদের কাছে জানা যায়, তোফাজ্জেল তার এলাকার একটি মেয়েকে ভালবাসতেন। মেয়ের পরিবার ওই মেয়েকে অনত্র বিয়ে দিলে ২০২০ সালে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। সেই থেকে সে ভবঘুরের মতো বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন। ক্ষুধার যন্ত্রণা সইতে না পেরে মানুষের কাছে খাবার চেয়ে খেতেন। গত বুধবার ঢাবির কতিপয় পাষণ্ড তাকে চোর সন্দেহে আটক করে। তারপর ক্ষুধার্ত তোফাজ্জেলকে ভাত খাইয়ে নৃশংসভাবে খুন করে। তোফাজ্জেলের বড়ভাইয়ের স্ত্রীর কাছে জানা যায়, খুনীরা তোফাজ্জেলকে আটক করে তার কাছে ফোন করে ২ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা চেয়েছিলো। হুমকি দেয়া হয়েছিলো, টাকা না দিলে খবর আছে।
জানানা শেষে এলাকার বিক্ষুব্ধ মানুষ পাথরঘাটার চরদুয়ানী বাজারে মানববন্ধন করে। এতে খুনীদের অনতি বিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।