রিয়াজুল হক সাগর,রংপুর।
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় চলমান বন্যায় বিভিন্ন ইউনিয়নের পাকা-কাচা রাস্তা, ব্রিজ, কৃষি, মৎস্য খাত ও বসত বাড়ি ভাঙনে ৫ কোটি টাকার অধিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অব্যাহত বৃষ্টি আর উজানের ঢলে কয়েক দফায় তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে সৃষ্ট বন্যায় অবকাঠামো পাকা-কাচা রাস্তা, ব্রিজসহ মাছ, ফসল ও বাড়ি ভাঙনে এ পরিমান টাকার ক্ষতি হয়। এর বাইরে বিদ্যুৎ খুঁটি ও তারের ক্ষতি হয়। উপজেলা এলজিইডি অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, অতিবৃষ্টি ও বন্যায় ১৩টি পাকা রাস্তার ৬১.৭৪৯ কিলোমিটারের বিভিন্নস্থানে ও ৩ টি ব্রিজ ভেঙে ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। মৎস্য দপ্তরের প্রাপ্ত তথ্যে ৯৫ টির বেশি (১১.৫৫ আয়তন হেক্টর) পুকুরের ১৮ মেট্রিকটন মাছ বন্যায় ভেসে যাওয়ায় ক্ষতি হয়েছে ২০ লাখ টাকা। অপরদিকে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা যায়, চলতি বন্যায় ২ হেক্টর জমির চিনা বাদাম নিমজ্জিত হলেও ০.৬৫ হেক্টর জমির চিনা বাদাম ক্ষতি হয়। এতে ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এছাড়া ১ হেক্টর জমিতে চাষকৃত বিভিন্ন সবজি নিমজ্জিত হলেও ০.৪০ হেক্টর জমির সবজি ক্ষতি হয়ে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়। অন্যদিকে তিস্তার ভাঙনে ১ শত ১১ পরিবারের বাড়ি ভেঙে যাওয়ার তথ্য জানা যায় ইউএনও'র কার্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে। এর মধ্যে নোহালী ইউনিয়নে ৩৬, মর্নেয়া ইউনিয়নে ৫০ ও কোলকোন্দ ইউনিয়নে ২৫ জন পরিবারের বাড়ি ভেঙে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের ক্ষতির টাকার হিসেব দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ দেখায়নি। তবে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা জানান, বাড়ি ভেঙে যাওয়া প্রত্যেক পরিবারের কমপক্ষে আড়াই লাখ থেকে ৩ লাখ করে টাকার ক্ষতি হয়েছে। সে হিসেবে গড়ে এসব পরিবারের ৩ কোটির বেশী টাকার ক্ষতি হয়েছে। ত্রান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের আওতায় প্রায় ১২ কিলোমিটার কাচা রাস্তা ভেঙে নষ্ট হলে এতে ২৫ লাখ টাকার বেশী ক্ষতি হয়। তবে এলাকার জনপ্রতিনিধরা জানান, এ বিভাগের আওতায় নির্মিত রাস্তার ৫০ লাখ টাকার বেশী ক্ষতি হয়েছে। এদিকে বৃষ্টি আর দফায় দফায় তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়ে মানুষজন। কখনও প্রায় ৫ হাজারের কাছাকাছি আবার কখনও ২ হাজারের অধিক মানুষ পানিবন্দি হয়। পানিবৃদ্ধি আর কমানোর মধ্যেই আড়াই হাজার মানুষজন পানিবন্দি দীর্ঘসময় থাকে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের তথ্যে পানিবন্দির সংখ্যা হলো কোলকোন্দ ইউনিয়নে ৩ শত, লক্ষীটারী ইউনিয়নে ৪ শত, মর্নেয়া ইউনিয়নে ৫ শত, নোহালী ইউনিয়নে ৪ শত ৫০ ও গজঘণ্টা ইউনিয়নে ২ শত ৫০ জন। মোট ২ হাজার ২শতজন। পানিবন্দি ও বাড়ি ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থদের বিতরণের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৭ মেট্রিকটন চাল। যাহা বিতরণ অব্যাহত রয়েছে এবং ২ হাজার শুকনা খাবার প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাগণ জানান, অতিবৃষ্টি ও বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রস্তুত করে জেলা অফিস ও অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না বলেন, চলমান বৃষ্টি আর উজানের ঢলে সৃষ্ট বন্যায় এখন পর্যন্ত ক্ষতির তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো প্রস্তুত করেছে। বাড়ি ভাঙা ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও পানিবন্দিদের জন্য চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যা বিতরণ চলমান আছে। এছাড়াও শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। মজুদ আছে বিতরণের জন্য আরো শুকনা খাবার প্যাকেট।
প্রধান কার্যালয়ঃ ২৯ চামেলীবাগ, শান্তিনগর (টুইন টাওয়ারের পাশে) ঢাকা-১০০০।
শাখা কার্যালয়ঃ কালী মন্দির কমপ্লেক্স, বটতলা, কাউরিয়া বন্দর, হিজলা, বরিশাল।
যোগাযোগঃ ০১৭৫৭-৮০৭৩৮৫
E-mail: prothomkontho7@gmail.com
prothomkonthonews@gmail.com
© All rights reserved © Dailyprothomkontho.com Web Design by: SuperSoftIT.com