নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ-
বরিশালের হিজলা উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলের সরকারী জমি ভাগাভাগী ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গ্রুপিং তুঙ্গে, অসহায় হয়ে পড়েছে দুস্থ কৃষকরা।
জানাযায়, উপজেলার হিজলা গৌরবদী ইউনিয়নের জানপুর, বিশকাঠালী, ও কেউরিয়া সহ বিভিন্ন মৌজায় খাস জমি রয়েছে কয়েক হাজার একর। সেখানে যখন যার ক্ষমতা থাকে তখন তাদের দখলে চলেযায় ভূমি দখল। এতে চরাঞ্চলের অসহায় কৃষকরা শোষিত হয় ভূমি দস্যুদের হাতে।
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বিশিষ্ট সমাজসেবক ও দানবীর শেখ জালাল আহাম্মেদ তার পৈতিক সম্পত্তি থেকে ৮ টি ভূমিহীন পরিবারকে ১২ শতাংশ করে ৯৬ শতাংশ জমি দান করেন। ওই জমিতে অসহায় কৃষকরা ১ বছর যাবত ঘর নির্মান করে শান্তিপূর্ন ভাবে বসবাস করে আসছে। এখন তাদেরকে উচ্ছেদের পায়তারা করছে ভূমিদস্যুরা। উচ্ছেদের বিষয় শেখ জালাল আহাম্মেদের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি ঢাকায় বসবাস করি, আমি যখন আমাদের চরাঞ্চলের পৈতিক সম্পত্তি দেখতে আসি তখন দেখতে পাই নদী ভাঙ্গা কবলিত অনেকেই খুব অসহায় ভাবে জীবন যাপন করছে তখন তাদেরকে মাথা গোজার জন্য জমি দান করে ঘরবাড়ি নির্মান করে থাকতে দেই এবং এই অঞ্চলে কোন মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই তাই স্ব উদ্যোগে আমি একটি মসজিদ, একটি মাদ্রাসা ও একটি স্কুল করার পরিকল্পনা করি। তখন থেকেই ভূমিদস্যুরা আমার উপরে আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়।
শেখ জালাল আহাম্মেদ আরো জানায় তার পৈতিক জমি অসাহায় কৃসকদের দান করে রয়েছে বিপাকে তাকেও বিভিন্ন ভাবে ভূমিদস্যু খায়ের মৃধা ও রিপন খান সহ তাদের ক্যডার বাহিনীরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে আসছে, সেজন্য তার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বরিশাল ডিআইজি সহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তবে লিখিত আবেদন করেছে।
সরোজমিনে গিয়ে জানাযায়, বিগত দিনে একটি প্রভাবশালী মহলের নির্দেশে মৃত: আব্দুর রহমান চোকদারের নেতৃত্বে ঐ অঞ্চলের খাশ জমি ভোগ দখল করেছে।
তার মৃত্যুর পর সেই জমিগুলো দখল ও আধিপত্য বিস্তার করে বিভিন্ন গ্রুপ চরাঞ্চলের সাধারন কৃষকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
বর্তমানে ওই চরাঞ্চলের সরকারী খাশ জমি দখল নিতে মরিয়া মেমানিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল খায়ের মৃধা, ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সাধারন সম্পাদক শহিদুল ইসলাম রিপন খান (মাস্টার)।
মেমানিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল খায়ের মৃধার নির্দেশেই লতিফ হাওলাদার, কালাম মেলকার, ও খালেক গাজী সহ আরো কয়েকজন জমি লিজ দিয়ে একর প্রতি ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছে চক্রটি।
এভাবেই উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক শহিদুল ইসলাম রিপন খান এর নির্দেশে রফিক লাটিয়াল (চৌকিদার) সহ কয়েকজন চরাঞ্চলের সাধারন কৃষকদের উপর হামলা মারধর ও হুমকি দিয়ে সরকারের কয়েক শত একর খাশ জমি দখল করে নিয়েছে। ওই জমির উপর অগ্রিম খাজনা দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
চরাঞ্চলের নির্যাতিত কৃষক সেন্টু হাওলাদার, আলাউদ্দিন মাঝি, ইব্রাহিম সরদার, রাজ্জাক নপ্তী, ইয়ামিন সরদার, আনজু জমদ্দার, সহ অনেক ব্যক্তি অভিযোগ করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলে খায়ের মৃধা ও রিপন খানের নিধারিত ক্যডার বাহিনীর হাতে সময় মতো টাকা দিতে না পারলে প্রতিদিনই আমাদের নির্যাত শিকার হতে হয়। তারা আরো বলে আজ আপনাদের কাছে বললাম কাল হয়তো এই চরে আর থাকতে পারব না, আমরা আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের নিরাপত্তা চাই।
উল্লেখিত বিষয়ে আবুল খায়ের মৃধার সাথে আলাপকালে তিনি জানায় জানপুর মৌজায় তার ২৫ একর জমি ক্রয় করা আছে। এর বেশি তিনি ভোগ দখল করেন না।
শহিদুল ইসলাম রিপন খান বলেন আমার ক্রয়কৃত জমি ছাড়া অন্য কোন জমি ভোগ দখল করি না।
কৃষকদের উপর হামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে খায়ের মৃধা ও রিপন খান তা তা অস্বীকার করে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বকুল চন্দ্র কবিরাজ জানায় ভুমিদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত পূর্বক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।