নিজস্ব প্রতিবেদক।।
ডিজিটাল বাংলাদেশ করার নাম করে জয় গড়েছেন এক দুর্নীতির প্রজেক্ট এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রোগ্রাম। এই প্রজেক্টের দেখভাল করতেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গুণগান করাই ছিল এটির প্রধান কাজ। শুধু শেখ হাসিনার গুণগান করা বহু বিজ্ঞাপন তৈরি করে দেশ বিদেশে প্রদর্শন করাই ছিল এটির প্রধান কাজ। এছাড়া এটুআই’র আদৌ কোন কাজের নমুনা ছিল না। যে বিজ্ঞাপনগুলো করেই এই প্রজেক্টের জন্য বরাদ্দ থাকা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন উচ্চ পদে থাকা কর্মকর্তারা।
এটুআইতে এইচডি মিডিয়া নামে একটা গ্রুপ করা হয় এসব সরকারের পক্ষে নানা বিঙ্গাপন করার জন্য। কোটি কোটি টাকার প্রজেক্টে দেখা মেলেনি কোন নিয়ম কানুনের বালাই।
কোটি কোটি টাকার প্রজেক্টগুলো হাতিয়ে নেবার একটা নমুনা বলা যাক, একজনের নামেই একটি প্রডাকশন হাউজ বানানো হতো। যত টাকারই কাজ আসুক না কেন, সেই কাজগুলো চলে যেত সেই নিজের বানানো প্রডাকশন হাউজেই। অন্যান্য কিছু হাউজ কাজ পেলেও তাঁদের কাছ থেকেও হাতিয়ে নেয়া হতো মোটা অংকের টাকা। যেসব প্রতিষ্ঠান সৎভাবে কাজ করতে চাইতো কিন্তু ঘুষ দিতে রাজি হতো না, তাঁদের নাম লিস্ট থেকে বাদ দিয়ে দেয়া হতো। যেমন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি প্রতিষ্ঠান এটুআইয়ের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলায় সারাজীবনের জন্য ব্লাক লিস্টে রেখে দেয় এটুআই প্রোগ্রাম’র দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা।
এছাড়াও সরকারি এটুআই প্রোগ্রামের এই চক্র এখনও নতুন নিযুক্ত উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে তাদের ইচ্ছামতো বোঝানোর জন্য নানারকম ছক কষছে। অন্যদিকে তাদের সহযোগীদেরকে দিয়ে প্রকিউরমেন্ট খাতে কোটি কোটি টাকার ভাউচার বানিয়ে শেষসময়ের লু’ট’পা’ট চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
জয় এবং পলকের সহযোগী এই কর্মকর্তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা, সম্পদের তথ্য বিবরণী দাখিল এবং বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞাসহ তাদেরকে এটুআই প্রকল্প থেকে দ্রুততম সময়ে না সরালে এরা গোপনে বর্তমান জনবান্ধব সরকারের কার্যক্রম ব্যাহত হওয়া, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার করা এবং সরকারকে তথা দেশকে পুনরায় ঝুঁকির মধ্যে নিয়ে যাবে বলেও ধারণা করছেন অনেকে।
জানা গেছে, এটুআইয়ের প্রতিটি কর্মচারী এতটাই দাম্ভিকতার সাথে কথা বলতেন যেন তাঁরাই বাংলাদেশের সব মিডিয়া কন্ট্রোল করে। এইচডি মিডিয়া ছাড়াও আরও অনেকগুলো প্রজেক্ট আছে যারা বছরের পর বছর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার নামে করছেন টাকাপয়সা লুটপাট।
ক্ষোভ প্রকাশ করে নাম প্রকাশে একজন জানান, আজ দেশের বন্যা পরিস্থিতির এই ক্রান্তিলগ্নে আমরা ডিজিটাল সেন্টারকে জাতীয়করনের দাবিতে শান্তিপুর্ন আন্দোলন করছি বলে আপনারা ক্ষুব্ধ এটা বুঝতে পারছি। দেখেন আমাদের প্রগ্রামটি পূর্ব নির্ধারিত ছিল আমরা আজ ১৪ বছর সরকার ও এটুআই দ্বারা নির্যাতিত ও অবহেলিত। আমরা যদি এই মুহুর্তে প্রগ্রামটি বাতিল করি তাহলে এত লোকের জমায়েত কখোনো করতে পারবো কি না জানিনা। আর বিগত সরকারের আমলে যতবারই আমরা শান্তিপুর্ন সমাবেশ করতে চেয়েছি ততবারই আমাদেরকে বাশ থেরাপি দেওয়া হয়েছে। আমাদের দেখিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে। আমাদের নামে প্রজেক্ট বানিয়ে সব প্রজেক্ট খেয়ে ফেলেছে। আমাদের শান্তিপুর্ন আন্দোলনে যদি আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে আমি বাগেরহাট জেলার বৈশম্য বিরোধী সমন্বয়ক হয়ে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি- বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন ধ্বংস করেছে এটুআই’র দুর্নীতিবাজরা। এদের সম্পর্কে এক কর্মী জানান, আমরা ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তাগন সরকারের প্রকল্পের সাথে যুক্ত ছিলাম। আমাদের চাকরিটা হচ্ছে চুক্তিভিত্তিক। সরকারের পক্ষে কথা না বললে আমাদের অনেকেরই চাকরি থাকতোনা। আমরা মন খুলে কিছু বলতে পারতামনা। বাধ্য করা হতো আমাদের সরকারের বিষয়ে প্রচার ও প্রচারনা করতে। এই জন্য দয়াকরে কেউ আমাদেরকে ভুল বুঝবেননা। বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও আমরা এখনও স্বাধীন হতে পারিনাই। এই সরকার আমাদেরকে শুধু ব্যাবহার করেছে বিনিময়ে কিছু দিতে পারেনাই। আমাদের ১১ হাজার উদ্যোক্তার জীবন নষ্ট করেছে আমরা কাউকে ছাড় দেবোনা। আমাদের জীবন নষ্ট করার আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের কয়েকজন কর্মকর্তা দায়ী।
যারা এই এটুআই’র দুর্নীতির নাটের গুরু তাদের সম্পর্কে গোপনসূত্র জানায়, এটুআই এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী : সজীব ওয়াজেদ জয়ের বন্ধু। যুক্তরাষ্ট্রে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছে। দেশের আইসিটি সেক্টরের অপকর্মের মূল হোতা এই আনীর চৌধুরী। নিজ প্রকল্প এটুআই থেকে কয়েকটি অযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে (ট্যাপওয়্যার, অরেঞ্জ বিডি, সফট বিডি) বারবার কাজ দেয়ার মধ্যে দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, কাজ পাইয়ে দেয়ার ব্যাপারে সহকর্মীদের সরাসরি নির্দেশনা দিয়েছে, সেই টাকা বিদেশে পাচার করেছে, কাজ দেয়া প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে একটিতে তার নিজের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে (ট্যাপওয়্যার লিমিটেড), এরকম বহু বিতর্কিত কাজে আনীর চৌধুরী জড়িত ছিলো। এছাড়া সে প্রযুক্তিভিত্তিক ও তরূণদের বিপথে নেয়ার জন্য আওয়ামী সন্ত্রাসী প্রতিষ্ঠান সিআরআই এর সাথেও আনীর চৌধুরীর নিবিড় সংশ্লিষ্টতা ছিলো। সে এখন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে, জয় এর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে এবং সরকার পতনের পরেও রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্ট ও জনগণের সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করার নির্দেশনা পাঠিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারে এমন ব্যক্তি থাকলে ভবিষ্যতে দেশ আবার সন্ত্রাসীদের দখলে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মো. মাজেদুল ইসলাম : আনীর চৌধুরীর ডান হাত।
এটুআই এর প্রজেক্ট ম্যানেজার হয়ে সে এটুআই এর সকল দূর্নীতির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছে। দূর্নীতির টাকা দিয়ে করোনার আগে এবং পরে অনেকগুলো বিদেশ সফর করেছে। প্রজেক্ট ম্যানেজারের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে ডানপন্থী ও ধার্মিক কর্মকর্তাদেরকে চাকরিচ্যুত করা, অফিস শেষে সহকর্মীদের নিয়ে ক্লাবে যেয়ে নেশায় মত্ত হওয়া, নারী সহকর্মীদের সাথে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া সহ আরো অনেক অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।
ফরহাদ জাহিদ শেখ : সে সকল মন্ত্রণালয়ে নিয়মিত কর্মশালার নামে এটুআই থেকে ব্যাপক লুটতরাজ করেছে।
কোভিড-এর সময় ডাক্তারদের টাকা এবং প্লাটফর্ম তৈরির টাকা মেরে দিয়ে বিভিন্ন স্থানে জমি-ফ্লাট ও বিলাসবহুল গাড়ি ক্রয় করেছে। সে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পলককে দিয়ে সুপারিশ করিয়ে কমিটিতে নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করে প্রকিউরমেন্টে ছলচাতুরী করে তার পরিচিত প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিয়ে অবৈধভাবে ব্যাপক অর্থ আত্মসাৎ করে। সে নিজ টিমে বিভিন্ন সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিয়েছে। একাধিক মামলার আসামী মোঃ গোলাম সারওয়ারকে ফরহাদ পূর্ব পরিচিতির ভিত্তিকে চাকুরীর সুপারিশ করেছে, যদিও তার সংশিষ্ট বিষয়ে কোনো দক্ষতা, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। আরেক সন্ত্রাসী আবদুলাহ আল রায়হান, যাকে এটুআই থেকে নারী নির্যাতন মামলায় জেলে থাকা অবস্থায় বরখাস্ত করে, তাকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কাজ পাইয়ে দেয়া একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর ব্যবস্থা করে এবং বর্তমানে অবৈধভাবে চুরির টাকায় রায়হানকে নিজ টিমে রেখে কাজ করাচ্ছে। সে পলকের অত্যন্ত ঘনিষ্টভাজন ছিলো। বিভিন্ন জায়গা থেকে ঘুষ হিসেবে নারী সঙ্গী নিয়ে এবং নারী সহকর্মীদের লোভ দেখিয়ে তাদের সাথে অবৈধভাবে দৈহিক কার্যক্রম করা ছিলো তার নিত্ত-নৈমত্তিক কাজ। তার নামে ইউএনডিপি’তে অভিযোগ উঠেছে এবং কেলেঙ্কারির অভিযোগে ইউএনডিপি থেকে তার প্রমোশন বন্ধ করা হয়েছে।
পূরবী মতিন : সে পারিবারিকভাবে এবং নিজেও আওয়ামী লীগের একজন একনিষ্ঠ কর্মী।
এটুআইতে কর্মরত থেকে সে নিজের টিমকে দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও পলকের প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে এসেছে বিগত দিনগুলোতে। কাজ পেতে সুন্দরী নারী নিয়োগ সেই সাথে কর্মকর্তাদের মনোরঞ্জনের খোরাক মেটাতেন এই পূরবী মতিন। সে আনীর চৌধুরীর সহায়তায় প্রচারণামূলক কাজে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিয়ে ব্যাপক অর্থ হাতিয়ে নেয়।
মো. হাফিজুর রহমান ও তানভীর কাঁদের ইমন : এই ২ জন আনীর চৌধুরীর অবৈধ সম্পদ উপার্জনের মূল নায়ক। তারা প্রকিউরমেন্টে কাজ পাইয়ে দিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে লিয়াঁজো রাখা, আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থাপনা করা, সরকারি গোপন নথি, ডাটা ও তথ্য দিয়ে আনীর চৌধুরীকে সহায়তা করা ইত্যাদি কাজ সম্পাদন করে। এরা অল্প সময়ে প্রচুর অবৈধ সম্পদের মালিক বনে গিয়েছে।
মানিক মাহমুদ : জয়, পলক ও আনীর চৌধুরীকে ব্যবহার করে সকল মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় ও বাস্তবতা বিবর্জিত অনেকগুলো উদ্ভাবন উদ্যোগ নিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই মানিক।
অর্জিত সেসব অবৈধ সম্পদ দিয়ে সে বসিলা ও মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় একাধিক প্লট ক্রয় করেছে। তার এবং তার স্ত্রীর নামে ব্যাংক হিসেবেও বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ জমা রয়েছে। এছাড়া ডিজিটাল সেন্টারের দায়িত্বে থাকাকালীন উদ্যোক্তাদের নিকট থেকে অর্থ ও বিভিন্ন অবৈধ সুযোগ সুবিধা গ্রহণ, সুবিধা দেয়ার কথা বলে নারী উদ্যোক্তাদের সাথে অবৈধ দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়াসহ একাধিক অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে, সে আনীর চৌধুরীর খাস লোক। এজন্য অযোগ্য হওয়া এবং অভিযোগ জানা সত্ত্বেও আনীর চৌধুরী তাকে একাধিকবার পদোন্নতি দিয়ে শীর্ষ সুবিধাভোগীদের তালিকায় রেখেছে।
রেজওয়ানুল হক জামী : সে এটুআই কে ব্যবহার করে ই-কমার্স বাণিজ্যে ব্যাপক লুটতরাজ করেছে।
“একশপ” নামে একটি প্লাটফর্ম তৈরি করতো, সরকারি অর্থ বিনিয়োগ করতো এবং ডাক বিভাগের সিস্টেম ব্যবহার করে ব্যক্তিগত ব্যবসা চালু করতো এবং কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতো। সরকারি অর্থে কোনো কাজের জন্য বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ করলে ১৫% অর্থ তাকে অগ্রীম দিয়ে কাজ শুরু করতে হতো। ই-কমার্সের মাধ্যমে এই অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় তার স্ত্রীও জড়িত আছে, তাকে দিয়ে দাতা সংস্থা থেকে কাজের নামে লুটতরাজ চালিয়েছে। জামীর ভাগ্নে সোহেল রানা। তাকে এটুআইতে নিয়োগ দিয়ে অবৈধ কাজে সর্বাত্মক সহায়তার জন্য ব্যবহার করতো জামি।
মো. নাসের মিয়া : এটুআই এর অপারেশন্স এর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন প্রকিউরমেন্টে ভেন্ডর প্রতিষ্ঠানের সাথে লিয়াঁজো করতো।
কাজ পাইয়ে দেয়া, অর্থ আত্মসাৎ করা, নিজের পরিচিত কিন্তু অযোগ্য লোককে চাকুরী দিতে চাপ দেয়া, অবৈধ অর্থ দিয়ে বিদেশ ভ্রমণ এবং অন্যান্যদেরও অবৈধ অর্থের যোগান দেয়া ইত্যাদি অপকর্ম নিয়মিত ভিত্তিতে করতো। সে অবৈধ অর্থ দিয়ে ব্যক্তিগত সম্পদের পাহাড় গড়ে এখন বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে।
মো. ওমর ফারুক : মো. নাসের মিয়ার একান্ত সহযোগী এবং অবৈধ বিল-ভাউচার প্রস্তুতকারক। সে নিজেও অবৈধ অর্থ দিয়ে বহু দেশ সফর ও ব্যক্তিগত সম্পদের পাহাড় গড়েছে।
এটিএম আল-ফাতাহ : বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের এই কর্মকর্তার মূল দায়িত্ব কলেজে শিক্ষকতা করা হলেও গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার বাসিন্দা এই পরিচয় ব্যবহার করে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের শুরুতেই সে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) পদ বাগিয়ে নেয়।
সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগে অধিদপ্তর থেকে বিতাড়িত হয়ে একই পরিচয় ব্যবহার করে কোন প্রকার টেকনোলজিক্যাল জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও সে এটুআইতে চাকরি বাগিয়ে নেয়। ছয় বছরের অধিক সময় সরকারের নথি সিস্টেমে কর্মরত থেকে সে একই ভেন্ডারকে বারবার কাজ পাইয়ে দেবার ক্ষেত্রে আনীর চৌধুরীকে সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে।
আসাদ-উজ-জামান : স্কিল খাতে শুধুমাত্র ইভেন্ট আয়োজন করে কোটি কোটি হাতিয়ে নেয়া এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী নারী সহকর্মীদের সাথে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া, কেউ রাজী না হলে তাকে চাকুরীচ্যুত করার ভয় দেখানো, সহকর্মীদের সাথে দুর্ব্যবহার, স্কিলস পোর্টাল তৈরির কন্ট্রাক্ট জোর করে সফট বিডিকে পাইয়ে দিয়ে অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে বিলাসবহুল গাড়ি ক্রয়সহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তার নামে ইউএনডিপি’তে অভিযোগ উঠেছে এবং ইউএনডিপি কন্ট্রাক্ট থেকে তাকেও অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
তহুরুল হাসান টুটুল : সরকারি অর্থে একটি পেমেন্ট গেটওয়ে তৈরি করে এর মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের মূল হোতা এই টুটুল।
এই গেটওয়ের মাধ্যমে সরকারি ফি প্রদান করে প্রতারণার শিকার হয়েছে বহু মানুষ। সরকারি পাটফরম হওয়ায় এর বিরুদ্ধে কেই অভিযোগ করতে পারেনি, যারা করেছে তাদেরকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে। এই অর্থ প্রকল্পের বাইরে একটি অ্যাকাউন্টে জমা হয় যার সুদসহ সম্পূর্ণ অর্থ আত্মসাৎ করেন এই টুটুল। সে কোটি কোটি টাকা দুবাইতেও পাচার করেছেন এমন অভিযোগ রয়েছে। এই অর্থ দিয়ে যে পরিবারসহ ও অফিসের অন্যান্য অভিযুক্ত সহকর্মীর সাথে নিয়মিত বিদেশ সফর করেছে।
মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন : প্রশাসন ক্যাডারের ২৭তম বিসিএসের এই কর্মকর্তা লিয়েনে এটুআই প্রোগ্রামে যোগ দেবার পর থেকেই প্রকিউরমেন্ট খাতে ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের মালিক বনে গেছে।