মৌলভীবাজার প্রতিনিধি॥
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার মরা বিলাস নদীর জমি দখলে নেওয়ার ধুম পড়েছে। দখলে দখলে বিলিন হচ্ছে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার মরা নদী বিলাস। দখলদাররা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙলী দেখিয়ে বিলাস নদীর বিভিন্ন অংশে বাড়িঘর, মহিষ্যের বাতান,ধানের বীজতলাসহ নানান স্থাপনা বানিয়ে দখল করে নিচ্ছেন। নদীর জমি দখলে নিতে দখলদারদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও বিরোধ তৈরি হচ্ছে। জোরপূর্বক একে অপরকে দখলি জমি থেকে উৎখাতেও মেতেছেন তারা। সব মিলিয়ে মরা বিলাস নদী দখল নিয়ে নৈরাজ্য বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মরা বিলাস নদীর জমি দখলে নিতে এলাকায় ত্রাস হিসেবে দেখা দিয়েছে আব্দুল হান্নান নামে এক ব্যক্তি। তিনি সবচেয়ে বেশি পরিমাণ নদীর জমি দখলে নিয়েছেন। দখলি জমিতে মৎস্য প্রকল্পসহ ধানের আবাদ করছেন। নতুন করে রাজা ফিশারি নামে একটি মৎস্য প্রকল্পের বিপরীত দিকে নদীর বিশাল অংশ দখলে নিয়ে ধানের বীজতলার জমি তৈরি করছেন আব্দুল হান্নানের লোকজন। হান্নান ছাড়াও আরও অনেকে নদীর বিস্তীর্ণ জায়গা দখল করে রেখেছেন। দখলদারদের উচ্ছেদ করে নদীর জমি উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মরা বিলাসে প্রায় দুই বিঘা জমি বীজতলার জন্য তৈরী করছেন দুইজন কৃষক। ব্রিটিশ-বাংলা এগ্রো লিমিটেডের সামনে মরা বিলাস নদীর অংশে ধানের বীজ রোপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন শ্রমিকরা। ওই স্থানে সরকারি গ্রামীন সড়কের পাশে রয়েছে একটি কাটা গাছ।
স্থানীয়রা জানালেন, আব্দুল হান্নান জোরপূর্বক মরা বিলাস নদীর সরকারি জমি দখল করে চাষাবাদ করছেন। আর গাছটি কেটেছেন তার পুত্র মাসুম মিয়া।
স্থানীয় বাসিন্দা ইলিয়াস মিয়া বলেন, এখানে সরকারি জায়গায় বীজতলা করছে হান্নান মিয়া। উজানে হান্নান মিয়ার দখলে আরও জায়গা আছে। তিনি মরা গাঙের বিভিন্ন অংশ দখল করে খাচ্ছেন। কেউ বাধা দিলে তাকে হুমকি-ধমকি দেন।
মতিগঞ্জ গ্রামে অবস্থিত ব্রিটিশ-বাংলা এগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো. হারুনুর রশীদ হারুন বলেন, হান্নান মিয়া ও তাঁর ছেলে মাসুম মিয়া মরা বিলাস নদীর বিশাল অংশ দখলে নিয়েছেন। তাদের প্রতিষ্ঠানের সামনে নদীর জায়গা তারা দখলে নিতে এলে তিনি বাধা দিয়েছিলেন। এ সময় তাঁকে গালিগালাজ ও মারধর করে হান্নান ও মাসুম। তাদের মৎস্য প্রকল্প থেকে মাসুম মাছ ধরে নিয়ে যায় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা মখলিছ মিয়া বলেন, এক সময়ের খরস্রোতা বিলাস নদী এখন মৃতপ্রায়। নদীর বেশির ভাগ অংশে শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকে না বললেই চলে। এ অংশের মতিগঞ্জ এলাকার নদীর জমি জবরদখল করে চাষাবাদ, গরু-মহিষের বাথান ও মাছের খামার করেছেন হান্নান। এ ছাড়া নদীর পাড়ের মাটি কেটে বিক্রি, সড়কের পাশের গাছ কেটে ফেলা ও নদীর সরকারি জমি বাথান মালিকদের কাছে ভাড়া দেন ।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সালাউদ্দিন বিশ্বাস বলেন, ঘটনা শুনে আমি আমাদের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। যদি কেউ বেআইনী কাজ করে থাকে এবং আমাদের তদন্তে আসে, তবে আমরা বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবো।