মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
সারাদেশের ন্যায় মানিকগঞ্জে ঘন কুয়াশা ও হিমেল ঠান্ডা বাতাসের সাথে জেকে বসেছে তীব্র শীত। এতে চরম কষ্টে দিন কাটাছে মানিকগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডের শত শত কর্মহীন মানুষ। জেলা জুড়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষরা।
জেলা আবহাওয়া বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় মানিকগঞ্জে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দুপুর ২ টায় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়।
সারাদিনে সূর্যের দেখা না থাকায় দিনে ও রাতে বেড়েই চলেছে শীতের তীব্রতা। তীব্র শীতের ফলে দিনমজুর, ভ্যানচালক , রাজমিস্ত্রী, রিকশাচালক সহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের চরম ভোগান্তি চরমে ।
মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রম বিক্রি করতে আসা সহস্রাদিক শ্রমিক কাজ না পেয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। এসব ছিন্নমূল খেটে খাওয়া মানুষের পাশে শীতবন্ত্র নিয়ে সরকারি বা বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠান এখন পর্যন্তও তাদের পাশে দাঁড়াইনি।
এই তীব্র শীতে সারা দিন ওভার ব্রিজের নিচে বসে ঠান্ডা বাতাসে বসে থাকতে হচ্ছে তাদের। তবে রাতের বেলায় তারা খোলা আকাশের নিচে কেউ জেলা সদর হাসপাতালে বারান্দায় শুয়ে থাকতে দেখা গেছে৷ শীত বস্ত্র না থাকায় বেশির ভাগ রাত জেগে আগুন পোহায়ে শীত নিবারণ করে বলে তারা জানায় ।
জেলা জুড়ে কৃষিকাজ করার জন্য বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, টাঙ্গাইল, পাবনা থেকে’ দিনমজুরা আসে। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঠিক মত শীত বস্ত্র না থাকায় ও কয়েকদিনে শীত বেড়ে যাওয়ায় কাজ না পেয়ে অনেকেই বাধ্য হয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছে ।
দিনমজুর হিসেবে কাজ করতে আসা সিরাজগঞ্জ এর চৌমুহী থানার বাসিন্দা আবুল মিয়া জানান বলেন,আমি ১০ দিন যাবত আসসি এসে ৩ দিন কাজ করেছি। এর মধ্যে কয়েক দিনের ঠান্ডায় আর কাজ পাচ্চাছি না। হাতে টাকা পয়সা নাই৷ খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে আমার।
বগুড়া থেকে আসা আয়নাল বলেন, আমাদের কাজটি মূলত কৃষি জমিতে দিনমজুরীর কাজ। কিন্তু প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে খেতে নেমে কৃষি কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না ফলে আমরা কর্মহীন হয়ে পড়েছি। আয় রোজগার করতে পারতেছি না।
দিনাজপুর থেকে আসা রফিক বলেন, আগে দিনমজুর এর কাজ করতাম এখন গ্যারেজ থেকে ভাড়া নিয়ে অটোবাইক চালাই যা থেকে দিয়ে ১ হাজার টাকা রোজগার হতো, গ্যারেজ ভাড়া, অটো ভাড়া খাওন দিয়ে ভালই থাকত। তবে কয়েক দিনের তীব্র শীতের ফলে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ টাকাও রোজগার করতে পারি না। যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলে না। শীতে খুব টানা পড়ায় পরছি।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সূত্রমতে, অন্যান্য রোগীর তুলনায় কয়েক দিন যাবত শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দুইদিন যাবত প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রর্দুভাব দেখা দিয়েছে। এতে বৃদ্ধ ও শিশুরা বেশিমাত্রায় শীত জনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
মানিকগঞ্জের আরিচায় অবস্থিত আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো রাসেল শাহ্ বলেন , শুক্রবার সকাল ৯টায় মানিকগঞ্জেরে আরিচায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুরে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা আরও দুই তিন দিন অব্যাহত থাকবে।