মাগুরা প্রতিনিধি।।
গত ৫ই আগষ্ট ২০২৪ উত্তাল ছিলো বাংলাদেশ তৎকালীন স্বৈরাচারী সরকার পতনের আন্দোলনে। প্রথমে শুরু হয় কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। পরে সেই আন্দোলন নির্বিচারে গুম খুনের অভিযোগে ধাপে ধাপে শেখ হাসিনা সরকারকে স্বৈরাচারী সরকার হিসেবে আখ্যা দিয়ে অর্থ্যাৎ আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের দাবি নিয়ে।
সেই ধারাবাহিকতায় গত ৫ই আগষ্ট সরকার পতনের দাবির প্রেক্ষিতে রাজপথে নেমে আসে সাধারণ শিক্ষার্থীসহ আমজনতা। এর এক পর্যায়ে চাপের মুখে শেখ হাসিনা সরকার থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়।
কিন্তু এই পদত্যাগ সহজে আসেনি। অনেক রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম হয়। রাজপথে তখন ছোট বড় সব বয়সী মানুষ আন্দোলনে নেমে আসে। এসময় পুলিশসহ তখনকার সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এসময় অনেকেই গুলিতে নিহত হয়, আহত হয়। রাজপথে নেমে আসেন সর্ব স্তরের মানুষ।
সেই আন্দোলনের সময় ঢাকার সাভারের মুক্তিরমোড়ে আগষ্টের পাঁচ তারিখ আন্দোলনে নেমে আসেন শেখ আব্দুস সোবহান (৪০) নামে এক ব্যাক্তি। এসময় আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হন তিনি ও তার ১৩ বছর বয়সী বড় ছেলে শেখ ইমন (১৩)। টাকার অভাবে ঢাকায় চিকিৎসা করাতে না পারায় দুই দিন আগে তিনি মাগুরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আহত আব্দুস সোবহানের বাড়ি মাগুরার শালিখা উপজেলার গঙ্গারামপুর ইউনিয়নের কাঠিগ্রাম। তার স্ত্রীসহ এক মেয়ে ও দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। ঢাকায় ডিপ্লোমা সেলসম্যান হিসেবে কাজ করে।
এসব বিষয়ে জানতে পেরে হাসপাতালে ছুটে আসেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে শফিকুল ইসলাম নামে একজন ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থী। এসময় তার সাথে আরও সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। খোঁজখবর নিয়ে আব্দুস সোবহান ও তার পরিবারের সাথে কথা বলে তাদের চিকিৎসার জন্য সব রকম সহযোগিতার কথা জানান। তিনি বলেন, আন্দোলনে যারা শরিক হয়েছিল আমরা শিক্ষার্থীরা তাদের পাশে থাকতে চাই। এসময় আবেগআপ্লুত সোবহান কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মাগুরা সদর হাসপাতালে কর্মরত একজন চিকিৎসক এই প্রতিবেদককে জানায়, সোবহানের শরীরে শতাধিক ছররা গুলি বা শর্টগানের কার্টুজ ঢুকে আছে। তার ছেলের শরীরেরও অনেক গুলো ছররা গুলি ঢুকে আছে। এগুলো একবারে বের করা সম্ভব নয়। তবে প্রতিদিন কয়েকটি গুলি বের করা হলে তারা সুস্থ হয়ে উঠবেন। আব্দুস সোবহান ২৩ আগষ্ট হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় আছেন। ডাক্তাররা তাকে দেখাশোনা করছেন। আশা করছি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে।