আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
বরগুনার আমতলীতে ত্রি-ফসলী জমিতে বিদ্যুতের সুইচিং উপ-কেন্দ্র নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম শুরু করেছে বরগুনা জেলা প্রশাসন। ৪৮.৮৫ একর জমি নির্ধারণ করে ২২৫ জন জমির মালিককে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। ত্রি -ফসলী জমি হারোনোর ভয়ে আতংকিত হয়ে পড়েছে জমির মালিকরা।
বরগুনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ মন্ত্রালয়ের অধিন পাওয়ার গ্রিড কোম্পাণী অব বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে সরকার ৪০০ কেভি বিদ্যুতের সুইচিং উপ-কেন্দ্র নির্মাণের জন্য আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৫১নং চলাভাঙ্গা মৌজার চলাভাঙ্গা গ্রামকে নির্ধারণ করে। জরিপ শেষে গত শুক্রবার ভূমি অধিগ্রহনের জন্য বরগুনা জেলা প্রশাসন ৪৮.৮৫ একর জমি নির্ধারণ করে ২৮৫ জন জমির মালিককে ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা মোঃ মাহফুজুর রহমান ও সার্ভেয়ার মোঃ আলী হোসেন স্বাক্ষরিত নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। নোটিশ পেয়েই ওই জমির মালিকরা তাদের ত্রি -ফসলী জমি হারোনোর ভয়ে আতংকিত হয়ে পড়েছে।
আজ (রবিবার) বিকেলে সরেজমিনে বিদ্যুতের সুইচিং উপ-কেন্দ্র নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণকৃত এলাকা চলাভাঙ্গা গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, ওই জমির চারদিকে আধাপাকা ধান আর ধান। এর মধ্যে কয়েকটি স্থানে মাছের ঘের এবং বিভিন্ন ফল ও সবজির বাগান রয়েছে। বেশ কয়েক জন জমির মালিক তাদের জমি অধিগ্রহন করা হয়েছে বলে নোটিশ পাওয়ার কথা স্বীকার করেন।
এ সময় কথা হয় কৃষক আঃ সত্তারের সাথে। তিনি বলেন, আমার জমি অধিগ্রহনের জন্য নোটিশ দিয়েছে। এ জমি নিয়ে গেলে আমি আমি কিভাবে পরিবার- পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকবো তা ভেবে পাচ্ছি না।
কৃষক শামসুদ্দিন বলেন, ওই অধিগ্রহণকৃত জমিতে আমিসহ অনেক কৃষক লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে মাছের ঘের এবং বিভিন্ন ফল ও সবজির বাগান করেছে। এখন সরকার ওই জমি নিয়ে গেলে কিভাবে আমাদের সংসার চলবে তা ভেবে পাচ্ছি না।
স্থাণীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিদ্যুতের সুইচিং উপ-কেন্দ্র নির্মাণের জন্য আমাদের বাপ-দাদার ত্রি-ফসলী নিয়ে যাবে এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। তারা আরো বলেন, আমাদের এই জমিতে এত ভালো ফসল উৎপাদিত হয় যা দেখতে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত পর্যন্ত এসেছিলো।
আমতলী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মোতাহার উদ্দিন মৃধা মুঠোফোনে বলেন, অধিগ্রহণকৃত জমির প্রকৃত মালিকরা যাতে ন্যায্য মূল্য ও ঝামেলাহীনভাবে তাদের জমির ক্ষতিপূরণের টাকা উত্তোলণ করতে পারে সেজন্য জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করছি।