মোঃ রাকিবুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধি।
কেএমপি’র মাদক বিরোধী অভিযানে গত রাতে (১০০+২০০) ইয়াবা ট্যাবলেট সহ আনন্দ টিভির বাগেরহাট প্রতিনিধি শেখ শিহাব উদ্দীন রুবেল (৩৭), পিতা-শেখ হেমায়েত উদ্দিন, সাং- পাগলা শ্যামনগর, থানা-ফকিরহাট, জেলা- বাগেরহাটকে আটক করেছে খালিশপুর থানা পুলিশ।
ফকিরহাটের আলোচিত প্রায় হাফ ডজন মামলা এবং হাফ ডজন জিডির আসামী শেখ শিহাব উদ্দিন রুবেল খুলনা খালিশপুর থানায় ইয়াবা সহ গেল রাতে গ্রেফতার হয়েছে। সংশ্লিষ্ট থানায় তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা হয়েছে এবং তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
শিহাব উদ্দিন রুবেল নাকি দক্ষিন বঙ্গের ইয়াবা সম্রাট! মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, বাগেরহাটের ২০১৯ সালের আগস্ট মাসের একটি তদন্ত প্রতিবেদনে মাদক সংক্রান্তে তার বিরুদ্ধে বিস্তারিত তথ্য উঠে আসে।
তার বিরুদ্ধে ফকিরহাট মডেল থানায় দুটি চাঁদাবাজি মামলা,ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১টি এবং বাগেরহাট কোর্টে একটি প্রতারণা মূলক মামলা রয়েছে। এছাড়া ফকিরহাট মডেল থানায় উক্ত শিহাব উদ্দিন রুবেলের বিরুদ্ধে পাঁচটি জিডি রয়েছে। অনুসন্ধান করলে সাতক্ষীরা, যশোর, খুলনা, পিরোজপুর সহ বিভিন্ন জেলায় মামলা এবং জিডি থাকতে পারে!
মামলা এবং জিডির বিস্তারিত বিবরণ নিম্নরূপ: ১) ফকিরহাট মডেল থানার মামলা নং-১৬, তারিখ-১৯/০৫/২০২১ এবং জি,আর-৯৭/২১ (ফকিরহাট), ধারা-৩৮৫/৩৮৭ পেনাল কোড। ২) ফকিরহাট মডেল থানার মামলা নং- ১৪, তারিখ-১৯/০৭/২০২১ এবং জি,আর-১৩৪/২১ (ফকিরহাট), ধারা-৩৮৫/৩৮৭ পেনাল কোড। ৩) ফকিরহাট মডেল থানার মামলা নং-০৭, তারিখ-১৪/০৬/২০২১ এবং জি,আর-১১১/২১ (ফকিরহাট), ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৯(১) ধারা। ৪) বাগেরহাট কোর্টের-৩৫/২০২০ (ফকিরহাট), ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড। ৫) ফকিরহাট মডেল থানার সাধারন ডায়েরি নং-৩০, তারিখ-০১/০৬/২০২১। ৬) ফকিরহাট মডেল থানার সাধারন ডায়েরি নং-১০৫০, তারিখ-২৭/০৫/২০২১। ৭) ফকিরহাট মডেল থানার সাধারন ডায়েরি নং-১০৪৯, তারিখ-২৭/০৫/২০২১। ৮) ফকিরহাট মডেল থানার সাধারন ডায়েরি নং-৯৭৭, তারিখ-২৫/০৫/২০২১। ৯) ফকিরহাট মডেল থানার সাধারন ডায়েরি নং-৮৯৫, তারিখ-২৩/০৫/২০২১। ১০) সর্বশেষ খুলনা খালিশপুর থানায় মাদক আইনে আরেকটি নতুন মামলা হল। তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ছিল।
গ্রাম-গঞ্জে একটি প্রবাদ আছে… চোরের সাত দিন, গৃহস্থের একদিন। কথিত সাংবাদিকতার আড়ালে দীর্ঘদিন প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে আসছিল! খালিশপুর থানা পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিয়ে তাকে আটক করতে সক্ষম হয়। ২০০০ পিস ইয়াবা লাগলেও দেওয়া যাবে বলে কোন একজনকে নাকি সে জানিয়েছিল!
ফকিরহাটের ৩/৪ জন রাজনীতিবিদের ছত্র ছায়ায় এতদিন এ ধরনের অপকর্ম করে আসছিল বলে জানা যায়! তার ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি তার ব্যবসার হাতিয়ার। ওই গাড়িতে একটি সুন্দরী নারী থাকে যে তার কেস পার্টনার। তাকে এবং তার কিছু সহযোগীদের গ্রেপ্তার করলে আরো অনেক তথ্য পাওয়া যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস। তাকে রিমান্ডে নিলে এবং তার মোবাইল ট্রাকিং করলে লোমহর্ষক তথ্য পাওয়া যাবে!
ফকিরহাট প্রেসক্লাবের কয়েকজন আদর্শবান সাংবাদিককে শায়েস্তা করার জন্য ফকিরহাটের কিছু রাজনীতিবিদ ওই ধরনের কিছু কথিত সাংবাদিকদের লেলিয়ে দিয়েছিল। ঐ সকল বিতর্কিত রাজনীতিবিদ সাংবাদিকদের মধ্যে গ্রুপিং তৈরি করে তাদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করেছে। ওই সকল বিতর্কিত রাজনীতিবিদ তাদেরকে ব্যবহার করেছে, বিভিন্ন সভা-সেমিনারে তাদের কে পাশে বসিয়ে সেলফি তুলেছে, মিটিং করেছে, আপ্যায়ন করেছে। তাদেরকে স্বপ্ন দেখিয়েছে পাঁচ তলা ভবন করে দিবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
যারা তাকে শেল্টার দিয়েছে এবং যাদের ছত্রছায়ায় এতদিন এই অঞ্চলে বীরদর্পে ঘুরে বেরিয়েছে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হোক। ফকিরহাটের জনগণ সব কিছু দেখেছে কিন্তু কোন প্রতিবাদ করতে পারেনি, কারণ পরিবেশ অনুকূলে যাচ্ছে না, তাই। ৩৫ বছর বয়সে ফকিরহাটের মতো জায়গায় দামি প্রাইভেট কার সহ কোটি টাকার বাড়িতে বসবাস, ভাবতে পারেন? ঐ সকল রাজনীতিবিদ এবং তার সহযোদ্ধারা প্রভাব-প্রতিপত্তি এবং অর্থের বিনিময়ে তাকে জামিনে ছাড়িয়ে আনলে অবাক হবার কিছু থাকবে না!
একটি এনজিওর মাঠকর্মী দিয়ে যার জীবন শুরু তার বর্তমান লাইফ-স্টাইল রাজা-বাদশাদেরকেও হার মানিয়েছে। সাতক্ষীরা অঞ্চলে থাকার সময় থেকে তাকে আর পিছনে ফিরতে হয়নি। ফকিরহাট বাসি দেখবে ফকিরহাটের কোন কোন সাংবাদিক এই সংবাদটি প্রচার করে আর কারা করেনা। যাদের ইন্দনে, যাদের ছত্রছায়ায়, যারা তাকে আগলে রেখেছেন তাদের কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম… এই লজ্জা, এই ঘৃণা, এই অন্যায় কি শুধু তার প্রাপ্য? না এর অংশীদার আপনারাও?