মাইনুল ইসলাম রাজু আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
বরগুনার আমতলীতে পঙ্গু ও অসহায় মাহবুবুর রহমানের জীবিকা নির্বাহের জন্য বরগুনা জেলা প্রশাসনের অর্থায়ণে আমতলী পৌর শহরের নতুন বাজার বাঁধঘাটের বটতলা এলাকায় ছোট একটি চা বিস্কুটের দোকান দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ (রবিবার) পঙ্গু মাহবুবুর রহমানের হাতে চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের বেতমোর গ্রামের আব্দুল মালেক মিয়ার পুত্র মাহবুবুর রহমান গত এক বছর পূর্বে চট্রগ্রামে বসে রেল দূর্ঘটনায় তার ডান পায় গুরুতর জখম হয়। ওই সময় তার পিতা সহায় সম্বল বিক্রি করে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পুত্রের চিকিৎসা করান। শত চেষ্টা করেও পুত্র মাহবুবুবুর রহমানের ডান পা টি রক্ষা করতে পারেনি। পচন ধরায় তার পাটি খেটে ফেলতে হয়। এতে সে পঙ্গুত্ব বরণ করেন। সহায় সম্বল হারিয়ে এক পর্যায় পঙ্গু মাহবুবুর রহমান ভিক্ষা বৃত্তি করে জীবন নির্বাহ শুরু করেন। কিন্তু ভিক্ষা বৃত্তি করে সমাজে জীবন নির্বাহ করা অত্যন্ত কষ্টদায়ক হওয়ায় পঙ্গু মাহবুবুর রহমান বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমানের সাথে দেখা করে তাকে জীবন নির্বাহ করার জন্য সহযোগিতা করার অনুরোধ করেন। পঙ্গু মাহবুবুর রহমানের কষ্ট লাগবে জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে আমতলী পৌরসভার বাঁধঘাট বটতলা বাজারে একটি ভাড়া ঘরে ছোট একটি চা বিস্কুটের দোকানের ব্যবস্থা করে দেন । আজ (রবিবার) দুপুরের পরে বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পিযূষ চন্দ্র দে ও আমতলী সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ নাজমুল ইসলাম অনুষ্ঠানিকভাবে ফিতা কেঁটে পঙ্গু মাহবুবুর রহমানের চা- বিস্কুটের দোকানটি উদ্বোধন করে দোকানের চাবি হস্তান্তর করেন। বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পিযূষ চন্দ্র দে বলেন, প্রায় ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে পঙ্গু মাহবুবের জন্য দোকানের ফার্নিচার, গ্যাসের চুলাসহ অন্যান্য মালামাল ক্রয় করে দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে পঙ্গু মাহবুবুর রহমানের দোকানে বরগুনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল মালামাল ক্রয় করে দেয়া হবে। পঙ্গু মাহবুবুর রহমান দোকানের চাবী হাতে পেয়ে বলেন, মানুষিক ভারসাম্যহীন অসুস্থ্য মায়ের চিকিৎসার টাকা সংগ্রহ করার জন্য গত এক বছর পুর্বে চট্রগ্রামে কাজ করতে যাই। সেখানে কাজ করতে গিয়ে রেল দূর্ঘটনায় আমি আমার একটি পা হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করি। পা হারানোর পর আমার জীবনে নেমে আসে অমানিষার ঝড়। আমি ভিক্ষা করা শুরু করি। বরগুনার ডিসি স্যারকে গিয়ে সব বলার পর তিনি আমাকে দোকান দিয়া দিছে। এখন আর আমার ভিক্ষা করতে হবে না। দোকানে চা বিস্কুট বিক্রি করে যা আয় হবে তা দিয়ে আমার মাকে খাওয়াতে ও চিকিৎসা করাতে পারবো। আল্লাহর কাছে দোয়াকরি বরগুনার ডিসি স্যারকে যেন আল্লাহ ভালো রাখে।