জালিয়াতি মামলায় বরিশালের বাকেরগঞ্জের দাড়িয়াল ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামসহ পাঁচজনকে কারাগারে পাঠানোর ছবি তুলতে গেলে ফটোসাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে আইনজীবী সহকারী ও ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থকরা।
এতে অন্তত ২৫ সাংবাদিক আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ২১ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার বিকেলে বরিশাল আদালত প্রাঙ্গণ ও এর সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন আমাদের বরিশাল পত্রিকার ফটোসাংবাদিক মো. নাঈম, আহসান আকিব, মতবাদের এন আমিন রাসেল, বাংলার বনের শাফিন আহমেদ রাতুল, জিয়াদ, জুয়েল, আজকের বরিশালের সাইফুল ইসলাম, সুজন হাওলাদার, আবু কালাম আজাদ (সোহাগ), সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়, বাংলাভিশন চ্যানেলের কামাল হোসেন, মোহনা টেলিভিশনের অপুর্ব বাড়ৈ, যমুনা টেলিভিশনের শুভ হাওলাদার, মাইটিভির শফিক হোসেন, লিটন মোল্লা, প্রথম সকাল পত্রিকার বার্তা সম্পাদক সুমাইয়া জিসান ও সুন্দরবন পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মিজান পলাশ।
হামলায় আহত সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম জানান, ইউপি চেয়ারম্যানের জালিয়াতি মামলায় কারাগারে পাঠানোর খবর সংগ্রহ করতে আদালত প্রাঙ্গণে যান সাংবাদিকরা। এরপর তাদের টাকা দিয়ে ম্যানেজের চেষ্টা করেন চেয়ারম্যানের ভাইয়ের ছেলে সুজন হাওলাদার, সাইফুল ও আইনজীবী সহকারী কামরুজ্জামান, বাপ্পিসহ বেশ কয়েকজন।
তিনি বলেন, ‘ম্যানেজ করতে না পেরে ইউপি চেয়ারম্যানের ছবি ধারণের সময় ফটোসাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয়।’
প্রথম দফার হামলায় বেশ কয়েকজন ফটোসাংবাদিক আহত হন। পরে প্রতিবাদ করতে গেলে আবারও হামলা চালানো হয়।
একপর্যায়ে আদালতের সামনে রাস্তায় ফেলে পেটানো হয় সাংবাদিকদের। এ সময় ভাঙচুর করা হয় সাংবাদিকের ছয়-সাতটি মোটরসাইকেলও।
অন্যান্য সাংবাদিক আদালতে গেলে তাদের ক্যামেরাও ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে আইনজীবী সহকারীরা।
বরিশাল মুখ্য বিচারিক আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট কবির উদ্দিন প্রামাণিক ও বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খোকন ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল বিশ্বাস বলেন, ‘আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলা চালিয়েছে কিছু মাদকসেবী আইনজীবী সহকারী। আমরা দেখেছি হামলায় নেতৃত্ব দেয়া কয়েকজনের বিরুদ্ধে মাদক ও নারী নির্যাতন মামলাও রয়েছে। নেশায় বুঁদ হয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তারা।’
বরিশাল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন বলেন, ‘আহতদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। আপাতত আহতদের মধ্যে ২১ জনকে ভর্তি করেছি। আমাদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত পরে জানাব।’
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আজিমুল করিম বলেন, ‘ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’