নিজস্ব প্রতিবেদক।।
বেতন বোনাসের টাকায় হিসাব মিলছেনা ঈদের কেনাকাটায়
দেরিতে হলেও জেলার মার্কেটগুলোতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটায়। বিত্তবানরা বিভিন্ন মার্কেটের নামি দামি ব্রান্ডের দোকানে কেনাকাটা করলেও মধ্যবিত্ত ও নিম্ম মধ্যবিত্তরা পড়েছেন বিপাকে। চাকুরীজীবীদের বেতন-বোনস এবং শ্রমজীবী মানুষের দিনের আয়ে হিসাব মিলছে না ঈদ বাজারের কেনাকাটায়। এই হিসাব মেলাতেই মধ্যবিত্ত ও নিম্ম মধ্যবিত্ত পরিবাররা ভীড় করছেন সাধারণ দোকান অথবা ফুটপাতের বাজারগুলোয়। নিম্ম আয়ের মানুষদের ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে অনেকটায় ভ’মিকা রেখেছে ফুটপাতের দোকান। তবে ক্রেতা এবং বিক্রেতারা বলছেন গত বছরের তুলনায় এ বছর পোশাকের দাম কিছুটা বাড়তি।
গত ২০ রোজা পর্যন্ত মার্কেটে ক্রেতাদের ভিড় না থাকায় দোকান মালিকরা অনেকটা হতাশ হয়ে পড়ে ছিলেন। তবে মাস শেষ হওয়ায় বেতন-বোনাসের টাকায় এখন বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। যারা বেতন-বোনাস পেয়েছেন শুধু যে তারাই মার্কেটে এসেছেন এমনটা নয়। যারা পাননি তাদের অনেকে এসেছেন বাজার ঘুরে দর-দাম দেখতে। হাতে টাকা এলেই যেন পছন্দের পোশাকটি কিনতে পারেন তারা।
শহরের বিভিন্ন এলাকায় মার্কেট, সাধারণ দোকান ও ফুটপাতের দোকন রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম এম আর রোড, চৌরঙ্গী মোড়, সৈয়দ আতর আলী রোড়। এখানে ছোট-বড় সকলের জন্য রয়েছে নানা ধরণের পণ্য। তবে নিম্ম মধ্যবিত্তদের ভরসা ফুটপাতের দোকান। যেখান থেকে মানুষ পছন্দমতো কেনাকাটা করে প্রস্তুতি নিচ্ছেন ঈদের আনন্দ ভাগাবাগি করতে।
শহরের আতর আলী সড়কে বেশিরভাগ গড়ে উঠেছে ফুটপাতের দোকানগুলি। এখানে চাহিদা অনুযায়ী শিশুদের পোশাকসহ বড়দের শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি-পায়জামা, সালোয়ার-কামিজ, জুতা-স্যান্ডেল,নারীদের হাত ব্যাগও পাওয়া যায় সাশ্রয় দামে। বড় মার্কেটগুলোয় ক্রেতাদের আনাগোনা থাকলেও ফুটপাতের দোকানেও বেড়েছে ভিড়। দিনে গরমের মাত্রা বেশি হওয়ায় সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এবং সন্ধা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ঈদ বাজারের বেচাকেনা চলে। ঈদের দিন যতো এগিয়ে আসবে বেচাকেনা সময়ও ততই বাড়তে থাকবে।
সাবিনা ইয়াসমিন একজন ঈদ বাজারের ক্রেতা। তিনি বলেন, আমি একটা কোম্পানিতে চাকরি করি। বেতন বোনাস যা পেয়েছি মাসের খরচ রেখে পরিবারের সবার নতুন পোশাক কিনতে পারবো বলে মনে হচ্ছে না। মার্কেটের কয়েকটা বড় দোকানে পছন্দের কাপড় দেখলাম। দামে চড়া। তাই সাধারণ দোকান থেকেই কেনবো।
দিন মজুর দেলোয়ার শেখ বলেন, মেয়েকে নিয়ে সালোয়ার-কামিজ কিনতে আসলাম। বড় দোকানে বড় লোকদের কারবার। আমরা ফুটপাতের দোকান থেকেই ঈদের কাপড় কিনে থাকি। এখানে মোটামুচি দামে সস্তা।
শাহিন শেখ বলেন, এখনও বেতন-বোনাস পায়নি। পরিবার নিয়ে ঈদের বাজার দেখতে আসলাম। বাজার গরম। শেষ পর্যন্ত ফুটপাতের দোকান থেকেই কিনতে হবে।
থানার সামনে ফুটপাতের পোশাক বিক্রেতা রবিউল ইসলাাম বলেন, আমাদের এখানে নিম্ম আয়ের মানুষরাই বেশি কেনা কাটা করতে আসে। তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী এখানে স্বাচ্ছন্দে কেনা-কাটা করতে পারে। তবে গত কয়েক বছর দেখছি মধ্যবিত্ত পরিবারও আসছেন এই ফুটপাতের দোকানে। যারা বেতনে টাকায় পেরে ওঠেন না। এখানে ৩শ থেকে ৫শ টাকা দামের মেয়েদের জামা পাওয়া যায়। যা বড় মার্কেটে ৮শ থেকে ১হাজার টাকা বিক্রি করে।
ভ্যানে পাঞ্জাবি ও শার্ট বিক্রি করেন নিমাই মৃধা। তিনি বলেন, ফুটপাতের দোকানে যারা আসেন তারা দামাদামি করেন বেশি। কারণ তারা স্বল্প আয়ের মানুষ।
দোয়েল ফেব্রিক্স এর স্বত্বাধিকারী আলাউদ্দীন বলেন, মেয়েদের যে সব পোশাকের চাহিদা রয়েছে তার মধ্যে ইন্ডিয়ান থ্রি-পিচ গঙ্গা, নায়রা, ভিবেগ, ভিপুল। এবারের ঈদ বাজারের কেনা-কাটায় কাপড়ের দাম কিছুটা বাড়তি। থ্রি-পিচ প্রতি ৩শ থেকে ৭শ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। তবে তুলনামূলক বিক্রি কম।