স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ :
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষর স্ত্রীর নিয়োগ রেজুলশন স্বাক্ষর না দেওয়ায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে মারধর করে কক্ষে আটকে রাখার ঘটনা ঘটেছে। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল দেয়ার পর সভাপতিকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও সাবেক ইউপি সদস্যসহ মোট ৫ জনের নামে টুঙ্গিপাড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ তৈয়াবুর রহমান। শনিবার বেলা ১২র দিকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গিমাডাঙ্গা গজালিয়া মহিলা ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটছ।
অভিযুক্তরা হলেন, গিমাডাঙ্গা গজালিয়া মহিলা ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুজাফর মোহাম্মাদ সালেহ (৬০), সাবেক ইউপি সদস্য মনির শিকদার (৪৫), গজালিয়া গ্রামের বাদশা শিকদারের ছেলে আরিফ সিকদার (২৮), মৃত মুসলিম শেখের ছেলে হাবিবুর রহমান (৫৫) ও জাকির শেখ (৪৫)।
অভিযাগ সূত্র জানা যায়, গিমাডাঙ্গা গজালিয়া মহিলা ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসায় উপাধ্যক্ষ পদটি দীর্ঘদিন যাবৎ শূন্য ছিলো। বর্তমান অধ্যক্ষ আবুজাফর মোহাম্মাদ সালেহ তার স্ত্রী রওশন আরা পারভীনকে উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগের জন্য দীর্ঘদিন ধের পায়তারা করে আসছিলেন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ওই মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর গত ২০ জানুয়ারি অধ্যক্ষ আবু জাফরের স্ত্রীসহ আরও তিনজন ডামি প্রার্থী পার্শ্ববর্তী একটি মাদ্রাসায় লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। পরীক্ষায় শুধুমাত্র অধ্যক্ষর স্ত্রীকেই উত্তীর্ণ করা হয়। তখন অসৎ উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে সভাপতি শেখ তৈয়াবুর রহমান অধ্যক্ষের তরিকত রেজুলশনে স্বাক্ষর দেননি। তাই সভাপতিকে মিটিংয়ের কথা বলে মাদ্রাসায় ডেকে স্বাক্ষর করতে বলা হয়। তখন সভাপতি স্বাক্ষর করেত না চাইলে বহিরাগতদের দিয়ে মারধর করায় অধ্যক্ষ।
মারধরের শিকার গিমাডাঙ্গা গজালিয়া মহিলা ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ তৈয়বুর রহমান বলেন, গত ২৩ মার্চ (শনিবার) অধ্যক্ষ আবু জাফর শিক্ষক নিয়োগর চাহিদাপত্র সংক্রান্ত আলোচনার জন্য আমাকে মাদ্রাসায় ডাকে। কিছু সময় পর অধ্যক্ষ তার স্ত্রীর নিয়োগ রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেত বলেন। আমি স্বাক্ষর না করেল মাদ্রাসা থেকে বের হতে দেবে না বলেও হুমকি দেন। পরে সেখানে আগে থেকে উপস্থিত থাকা বহিরাগতরা অধ্যক্ষের নির্দেশ আমাকে মারধর করে একটি কক্ষে আটকে রাখে। পরে ৯৯৯ এ ফান দিলে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে। তাই আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
স্ত্রীর নিয়োগ রেজুলেশনে স্বাক্ষর না করায় সভাপতিকে মারধরের বিষেয় জানেত চাইলে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ বলেন, সভাপতি তৈয়াবুর মাদ্রাসায় আসার পর স্বাক্ষর করতে বলেছি। এসময় তিনি কি স্বাক্ষর পরে করবো বলে সে জানায়। তখন অন্য শিক্ষকদের বলেছি তার টাকা-পয়সা নেওয়ার কোন ইচ্ছা আছে কি না। কারন বিপদ তো আমার, পূনরায় নিয়োগ দিলেই এক লাখ টাকা খরচ হয়ে যাবে। যেখান ডিজি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি স্বাক্ষর করেছ সেখান সভাপতি কেন স্বাক্ষর করেব না! সবাই মিলে অনুরোধ করার পরও সভাপতি স্বাক্ষর না দেওয়ায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তখন একটু হাতাহাতির ঘটনা ঘটতে পারে। আমি বিষয়টি থামানোর চেষ্টা করেছি।
এ বিষয় গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. গোলাম কবির বলেন, বিষয়টি আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে জানতে পারলাম। বিষয়টি উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত করে দেখবেন। তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। #