মাইনুল ইসলাম রাজু
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
বরগুনার তালতলীতে পুলিশকে গরু চুরির তথ্য দেওয়ার সন্দেহে গ্রাম পুলিশ হারুন খান (৩৮) ও তার ভাতিজা রুবেল খানকে (২৫) পিটিয়ে ও কুপিয়ে হাত ভেঙ্গে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় তালতলী থানায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের জাকিরতবক গ্রামের বাচ্চু মৃধা, মাসুম মৃধা ও কবির মৃধাসহ তাদের ১৮ থেকে ২০ জনের একটি দল গরু চুরির সাথে জড়িত। দীর্ঘদিন ধরে তারা এক কাজ করে আসছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এ বিষয়ে ছোটবগী ইউনিয়নের জাকিরতবক গ্রামের হযরত আলী চৌকিদারের পুত্র গ্রাম পুলিশ হারুন খান তালতলী থানা পুলিশকে গরু চুরির তথ্য দেওয়ার বিষয়ে সন্দেহ করেন বাচ্চু মৃধাসহ তাদের লোকজন।
বুধবার বিকেলে গ্রাম পুলিশ হারুন খান ছোটবগী ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়ার সময় খাজুরের পোল নামক স্থানে পৌছা মাত্র বাচ্চু মৃধা, মাসুম মৃধা ও কবির মৃধার নেতৃত্বে ১৮ থেকে ২০ জনের একদল সন্ত্রাসী লোহার রড ও লাঠি হারুন খানের উপর নিয়ে হামলা করেন। এসময় সন্ত্রাসীরা হারুনেকে পিটিয়ে তার বাম হাত ভেঙ্গে দেয়। খবর পেয়ে তার ভাতিজা রুবেল খান চাচাকে রক্ষায় এগিয়ে এলে তাকেও কুপিয়ে জখম করে এবং পিটিয়ে ডান হাত ভেঙ্গে দেয়।
তাদের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এসে আহত হারুন ও রুবেলকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন। তাদের অবস্থার অবনতি হলে মুমুর্ষ অবস্থায় তাদেরকে ওই রাতেই বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় বুধবার রাতে আহত গ্রাম পুলিশ হারুন খান এর বড় ভাই হানিফ খান বাদী হয়ে ১৮ জনের বিরুদ্ধে তালতলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার চন্দ্রিমা মন্ডল জানান, হারুন খান ও তার ভাতিজা রুবেলে হাতে পিঠে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাদের অবস্থা খরাপ হওয়ায় উভয়কেই বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
আহত গ্রাম পুলিশ হারুন খান মুঠোফোনে বলেন, বাচ্চু মৃধা, কবির মৃধা, মাসুম মৃধাসহ ১৮ থেকে ২০ জন সন্ত্রাসী বাহিনী এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে গরু চুরি করে আসছে। এমনকি তারা মাদকের সাথেও জড়িত। এ বিষয়ে পুলিশকে কে বা কারা তথ্য দিয়েছে। সে জন্য আমাকে সন্দেহ করে মারধর করে আমার বাম হাত ভেঙ্গে দিয়েছে। আমার ভাতিজা রুবেল আমাকে রক্ষা করতে আসলে তাকেও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে এবং কুপিয়ে ডান হাত ভেঙ্গে দিয়ে গুরুতর আহত করে। আমি সন্ত্রাসী বাচ্চু মৃধাসহ ঘটনার সাথে জড়িত সকলের বিচার চাই।
অভিযুক্ত বাচ্চু মৃধা গ্রাম পুলিশ হারুন খান এবং তার ভাতিজা রুবেলের উপর হামলার কথা অস্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, তারা গুরু চুরির সাথে জড়িত না বলেও দাবী করেন।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু মুঠোফোনে বলেন, গ্রাম পুলিশকে মারধরের ঘটনায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে তালতলী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
#