রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের একদল মেধাবী শিক্ষার্থী
বিষয়ভিত্তিক ফিল্ড রিপোর্ট তৈরি করার জন্য চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলায় অবস্থান করছেন। ১১ ফেব্রুয়ারি তাদের এ প্রতিবেদন তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। যা চলবে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
বিভাগের ৪৬ জন শিক্ষার্থী, ২ জন শিক্ষক ও একজন ফিল্ড অফিসারসহ মোট ৪৯ জন এসেছেন এ রিপোর্ট তৈরির কাজে। দুই শিক্ষক হলেন ভূ-বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক অধ্যাপক ড. এ. এইচ. এম. সেলিম রেজা এবং অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান। শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, দুই শিক্ষকই বন্ধুসুলভ, সহায়ক এবং পরিশ্রমী। শিক্ষার্থীদের সার্বিক কাজে সহায়তা করছেন তাঁরা।
ফিল্ড রিপোর্ট সম্পর্কে অধ্যাপক ড. এ. এইচ. এম সেলিম রেজা বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতিবছরই ফিল্ড রিপোর্ট তৈরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় যাই। এই বছর আমরা ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডতে এসেছি। এটা সাধারণত পাহাড়ি এলাকা নামে পরিচিত। এখানে বিভিন্ন ধরনের রয়েছে। আমি আশা করি শিক্ষার্থীদের গবেষণার কাজে এটা খুবই উপকারী হবে।
৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস। কিন্তু আমার শিক্ষার্থীদের সব ভালোবাসা ভূতত্ত্ব নিয়ে। কারণ এই দিবস উপলক্ষ্যেও শিক্ষার্থীরা ভূতত্ত্ব ছাড়া অন্য কিছুর প্রতি কোনো আবেগ প্রকাশ করছে না। তাদের সব আনন্দ-উচ্ছ্বাস শুধু ভূতত্ত্ব নিয়ে।
বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান বলেন, এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে হয়তো পুরাটা কারো পক্ষে জানা এবং বোঝা সম্ভব না, কিন্তু ভূতত্ত্বের মাধ্যমে আপনি একটু হলেও সেটা পারবেন। ভূতত্ত্ব হলো বাস্তবিক জ্ঞান-ভিত্তিক সমৃদ্ধ একটা বিষয় । আপনি যখন ভূতাত্ত্বিক বিষয়গুলো স্বচক্ষে দেখবেন, সেগুলো নিয়ে নিজে কাজ করবেন তখনই আপনার ভূতাত্ত্বিক জ্ঞান আরো বেশি পরিপূর্ণ এবং সমৃদ্ধশীল হয়ে উঠবে। ঠিক তখনই আপনি ভূতত্ত্বের সম্পূর্ণ মজাটা পেয়ে যাবেন। যেটা আমরা এখন অনুভব করছি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমরা চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডতে অবস্থান করছি এবং বিভিন্ন ভূতাত্ত্বিক ফিচার দেখছি। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা দুর্গম পথে চলে নানা ভূতাত্ত্বিক ফিচার মরফোলজি দেখছি, যেটা আসলেই অনেক সুন্দর এবং চমকপ্রদ। দিনগুলো জীবনের খাতায় স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী রিসার্চ চাকমা বলেন, ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছে ফিল্ড মানে হল আমরা যে থিওরি পড়াশোনা করি তা বাস্তবে দেখার জন্য। আমাদের পড়াশোনার সাথে বাস্তবের অস্তিত্বের সামঞ্জস্য আছে কি না তা প্রমাণ করার জন্যই আমরা ভূতাত্ত্বিক ফিল্ড করি। আমাদের ফিল্ডের জন্য চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা সত্যিই একটি দর্শনীয় স্থান। তাই এখানে এসে আমার খুবই ভালো লাগছে।
তিনি আরও বলেন, এখানে আসার পরে আমরা বিভিন্ন ধরনের ভূতাত্ত্বিক গড়ন পেয়েছি। বিভিন্ন ধরনের গাছপালা, সহস্র-ধারা ঝরনা ও পাহাড় দেখা ছিল নিতান্তই চোখের শান্তি। এছাড়া ঘন্টার পর ঘন্টা পাহাড়ি রাস্তায় হাঁটা ছিল এক অন্য রকমের অনুভূতি।