মাইনুল ইসলাম রাজু
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের গুলিশাখালী গ্রামে খালে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ জন আহত হয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ায় অভিযুক্তরা ওই ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে জীবনণাশের হুকমি দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ওই ঘটনায় আহতরা।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামের মোঃ সুলতান গাজী বাড়ীর পার্শ্ববর্তী স্লুইজের খালে ঝাড়া (জাইল) ফেলে রেখে সেখানে মাছ ধরে থাকেন। ঘটনার দিন দুপুরে সুলতানের ওই ঝাড়া দেয়া স্থানে একই এলাকার বেল্লাল চৌকিদার, জালাল চৌকিদার,নূরুল ইসলাম চৌকিদার ও সাইদুল চৌকিদার জোরপূর্বক মাছ ধরে নিয়ে যায়। এতে সুলতান গাজী তার ফেলা ঝাড়া (জাইল) থেকে মাছ ধরতে বাঁধা দিলে এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটিতে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে বেল্লাল চৌকিদার, জালাল চৌকিদার, নূরুল ইসলাম চৌকিদার ও সাইদুল চৌকিদার সুলতান গাজীকে (৫০) লাঠিসোটা ও দেশিয় অস্ত্র দা দিয়ে পিটিয়ে কুপিয়ে আহত করে। এ সময় সুলতান গাজীর হাতে দা দিয়ে কোপ দিলে তার ডাক চিৎকারে তার স্ত্রী আকলিমা বেগম (৪০) ও ইমরান গাজী (২০) এগিয়ে এলে তাদেরকেও পিটিয়ে হাত ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত ফুলা জখম করে। পরে স্বজনরা আহতদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।
ওই দিন বিকেলে আহত সুলতান গাজী অভিযুক্ত বেল্লাল চৌকিদার, জালাল চৌকিদার, নূরুল ইসলাম চৌকিদার ও সাইদুল চৌকিদারকে বিবাদী করে আমতলী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরের দিন (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দা ও কয়েকটি লাঠি জব্দ করে চলে আসে। এরপর থেকে ঘটনার সাথে জড়িতরা সুলতান গাজী ও তার পরিবারকে এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেন। বাড়াবাড়ি করলে জীবনণাশের হুমকি দেয় বলে আহত সুলতান গাজী আজ (শনিবার) দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন।
আহত সুলতান গাজী বলেন, আমার বাড়ীর পাশে গুলিশাখালী ¯øুইজের খালে আমি ঝাড়া (জাইল) ফেলে মাছ ধরি। আমার ফেলা ঝাড়ায় জোরপূর্বক একই এলাকার বেল্লাল চৌকিদার, জালাল চৌকিদার, নূরুল ইসলাম চৌকিদার ও সাইদুল চৌকিদার মাছ ধরে নিয়ে যায়। এতে বাঁধা দিলে আমি, আমার স্ত্রী ও পুত্রকে দেশিয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। এখন এ বিষয় নিয়ে বেশী বাড়াবাড়ি করলে তারা আমাকে জীবনণাশের হুমকি দিচ্ছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই, আমি আমার ও আমার পরিবারের জীবনের নিরাপত্তা চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বেল্লাল চৌকিদারের ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিয়ে সাংবাদিক পরিচয়ে ঘটনার কথা জানতে চাইলে তিনি ফোনের সংযোগটি কেঁটে দেন। তারপর একাধিকবার কল দিলেও তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মিজানুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, মাছ ধরা নিয়ে মারামারির ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। তদন্ত চলছে, প্রমাণ পাওয়া গেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।