কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
আমরা বলি,আগুন নিয়ে খেলা বা মরণ জেনেও আগুনে ঝাপ দেয়া। ঠিক তেমনি বিপদ হতে পারে জেনেও সাপ খেলা দেখানো এখনও রোজগারের একমাত্র পথ পাচু সাপুড়ের। ভীষণ চ্যালেঞ্জিং এই পেশা। যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে বড় কোন অঘটন! ফোঁস ফোঁস করছে এক হাতে ধরা কোবরা। সাপ ও সাপুড়েকে ঘিরে তখন মানুষের উপচে ভিড়। এটি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী সাপ খেলা প্রতিযোগিতা। কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী সাপ খেলা প্রতিযোগিতা। যা স্থানীয়দের ঝাপান খেলা নামে পরিচিত। বুধবার সকাল ১০টায় উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হুগলার চাপাইগাছি বাজারে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলার চাপাইগাছি বাউল ক্লাব ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। সেখানে দূরদূরান্ত থেকে এসে ১১জন সাপুড়ে এই সাপ খেলা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। নিয়ম অনুযায়ী অপেক্ষাকৃত উঁচু কাঠের পাটাতনের ওপর সাপ ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর সাপুড়ে কোমর দুলিয়ে নেচে নেচে বিন বাজায়। সে সময় সাপুড়ের সাথে তাল মিলিয়ে কাঠের পাটাতনের ওপর এ ফনা তোলে নাচানাচি করে সাপ। প্রতিযোগিতায় বাহারি রঙের শতাধিক সাপের নাচ উপভোগ করেন উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ।সাপ খেলা প্রতিযোগিতায় সাপকে ২৪ ইঞ্চি উচ্চতায় ফনা তোলাতে সক্ষম হয় প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বৃত্তিপাড়ার পাচু সাপুড়ে। সাপকে ২৩ ইঞ্চি উচ্চতায় ফনা তুলিয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে একই জেলার পাংশা এলাকার দুলু সাপুড়ে । পরে তাদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেয় আয়োজক কমিটি। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী পাচু সাপুড়ে বলেন, পেটের দায়ে সাপের খেলা দেখাই। মাঝে মাঝে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাপ খেলা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করি। সাপ খেলা দেখানো বিপজ্জনক জেনেও তবুও সাপ খেলা দেখাই। কারণ এটা এখনও আমাদের রোজগারের একমাত্র ভরসা। আয়োজন কমিটির সভাপতি লিটন প্রামানিক জানান, আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা গুলো হারিয়ে যাচ্ছে। ঝাপান খেলা তেমনি একটি ঐতিহ্যবাহী খেলা, যা একসময় গ্রামবাংলায় প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দিবসে অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন এসব খেলা হারিয়ে যাচ্ছে। তাই হারিয়ে যাওয়া খেলাকে বাঁচিয়ে রাখতে এই আয়োজন করা হয়েছে ।