কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
আসন্ন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নে আগামী ৫ জানুয়ারি ২০২২ পঞ্চম ধাপে অনুষ্ঠিত হবে ইউপি নির্বাচন। এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষনা দেন ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে যাকে মনোনীত করা হবে তার পক্ষে সকলকে ঐক্যব্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আওয়ামীলীগের কোন ব্যক্তি নৌকার বিপক্ষে কাজ করলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবারের নির্বাচনে আব্দালপুর ইউনিয়নে দল থেকে নৌকা মনোনীত করা হয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আরব আলীকে। এতে সন্তুষ্টি হয় নি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলী হায়দার স্বপন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শাহাবুদ্দীন স্বপন। তারা হয়েছেন নৌকার বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী। তাদেরকে ইতিমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আব্দালপুর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান আলী হায়দার স্বপন এর বাবা ইছহাক আলী মাস্টার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন এবং ইউপি চেয়ারম্যান এর দায়িত্বও পালন করেছেন। ইছহাক আলী মাস্টার শত বছরের মানুষ বয়স হয়েছে শেষ বয়সে তার ইচ্ছে ছিলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করবে, সেটাও সম্ভব হয়েছে। আলী হায়দার স্বপন এর ভাই আলী মুর্তজা খসরু সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের।
গত ২০১৬ সালের নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান নির্বাচন করে আলী হায়দার স্বপন হয়েছিলেন চেয়ারম্যান, সতন্ত্র চেয়ারম্যান হয়েও আওয়ামী লীগের দলে ইউনিয়নে সহসভাপতির দায়িত্ব পান। এখানেই শেষ নয়, আলী মুর্তজা খসরুর প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারন সম্পাদক পদে দায়িত্ব পেয়েছিলেন জুয়েল রানা হালিম, সে খসরুর সম্পর্কে ভাতিজা। এই পরিবারকে আওয়ামী লীগ এতো কিছু দেওয়ার পরও নৌকাকে পরাজিত করতে পুনরায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে আলী হায়দার স্বপন। এবারে স্বপন এর ভাতিজা ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ছিলেন। এবারে ইবি ছাত্রলীগের নেতা হতে ঢাকায় অবস্থান করছে আরাফাত।
এদিকে নির্বাচনে নৌকার বিদ্রোহীতা করছে আলী হায়দার স্বপন। এরকম একটি ঘটনার পরেও তার ভাতিজা বা তার পরিবার কিভাবে আওয়ামী লীগ করতে পারে? এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় গণমাধ্যমকর্মীদের। ঘটনার বিষয়টি গনমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ায় দৈনিক সময়ের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক মাসুম বিল্লার নামে ইবি থানায় সাধারন ডায়েরি করেছেন তুষার নামের এক ব্যক্তি। মাসুম বিল্লাহর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি নথিভুক্ত করায় এ নিয়ে অনেকেই ক্ষোভ জানান।
যা সত্য, তাই সুন্দর, হতে পারে তা কারও কারও কাছে বিব্রতকর। সৎ সাংবাদিকতা সত্যের আরাধনা করে। সত্য কথা তুলে ধরলে মামলা হলে এতে সমাজ প্রতারিত হয়, বিভাজিত হয়, সংকট দীর্ঘায়িত হয় এবং উন্নয়ন ও অগ্রগতি ব্যাহত হয়।
আওয়ামী লীগের পদ নিতে দৌড়ঝাঁপ করবেন আর নৌকার বিদ্রোহীতা করবেন সেটা কেমনে কি? রাষ্ট্রশক্তি বা রাষ্ট্রক্ষমতা প্রত্যাশী রাজনৈতিক শক্তির সমালোচনা, সামাজিক অপশক্তিগুলোর দুস্কর্ম, দুর্নীতিসহ নানাবিধ অনিয়মতান্ত্রিকতা জনসম্মুখে প্রকাশ বা দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রচার করা সাংবাদিকতার আরাধ্য দায়িত্ব। কিন্তু এ সব করতে গিয়ে অনৈতিকতার অভিযোগ বর্তালে তা পেশার মহত্ব ও গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। যুদ্ধবাজ বা সংঘাতবাজ নয়, মানুষ শান্তি ও সৌহার্দবাদী হবে মানব সভ্যতার এটিই স্বাভাবিক প্রত্যাশা করে বিজ্ঞ মহল।
এগুলো নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ যা আমাদের মতো দেশে প্রায়সই উপেক্ষিত থাকে।কিন্তু এ সত্য কখনোই অনস্বীকার্য নয় যে, সাংবাদিকতা সত্য ও শান্তির স্বার্থে ভূমিকা রাখার উপযুক্ত বাহন।
সাংবাদিক মাসুম বিল্লার নামে যে সাধারন ডায়েরি নথিভুক্ত করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্যকে ধামাচা দিতে করা হয়েছে জানান গণমাধ্যমকর্মীরা।
গণমাধ্যমের মুক্তি ও সাংবাদিকদের স্বাধীনতা চেয়ে ইবি থানা প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন, ইবি থানা প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজ, সাংবাদিক বাদশা আলমগীর, আবীর, সুমন সহ অনেকে।
তথ্য সূত্রে জানা গেছে, থানায় সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মাস্টার্সের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র তৌফিকুর রহমান তুষার।
সাধারণ ডায়েরি সূত্রে জানা যায়, ‘প্রতি সময়ের কাগজের’ ইবি থানার স্থানীয় প্রতিনিধি মোঃ মাসুম বিল্লাহ (২৮), পিতা-মৃত ফজলু মন্ডল, সাং-বিষ্ণুদিয়া, থানা-ইবি, জেলা-কুষ্টিয়া নিজের ফেসবুক আইডির টাইমলাইনে এবং পরবর্তীতে তার পত্রিকার পেজে “চাচা নৌকা বিরোধী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী, অর্ধকোটি টাকা নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা হতে ঢাকা ভাতিজা” শিরোনামে একটি নিউজ পোষ্ট করে। যা সম্পূর্ণ অসত্য ও বানোয়াট। এই পোষ্টটি মাসুম বিল্লাহ উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাছিলের জন্য পোষ্ট করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এমতাবস্থায় উপরোক্ত বিষয়ের প্রেক্ষিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক মোঃ ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত (২৬), পিতা-মোঃ আলী আসাদ সিদ্দিকী, সাং-পশ্চিম আব্দালপুর, থানা-ইবি, জেলা- কুষ্টিয়াসহ তার সঙ্গীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে তিনি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। ডায়েরি নং- ১০৬২।