ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।।
শখের বশে মানুষ বিভিন্ন পশু পাখি লালন পালন করেন। কিন্তু ইঁদুর পালন করছেন এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বিরল। ফসলি জমি থেকে শুরু করে মূল্যবান জিনিস-পত্রের ক্ষতি করায় ইঁদুর নিধনে যখন মানুষ ব্যস্ত ঠিক সেই সময়ে ইঁদুরের খামার স্থাপন করে সাড়া ফেলেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় নাসির উদ্দিন। প্রয়োজনীয় সহায়তা পেলে বাণিজ্যিক ভাবে খামার স্থাপনের কথা জানালেন এই খামারী।
জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ জানিয়েছে খামারীদের স্বর্থে এসব লাবরেটরী এনিমেলের চিকিৎসা সহয়তা দেয়া সম্ভব।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার আব্দুল্লাহপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান মিয়ার ছেলে মো. নাসির উদ্দিন ইঁদুর পালন করে চমক সৃষ্টি করেছেন। ইউটিউব দেখে এ খামার গড়ে তুলেন। জীবিকার প্রয়োজনে দীর্ঘ বছর রাজধানী ঢাকায় একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি শেষে ২০১৬ সালে গ্রামে চলে আসেন। এরপর সংসারের হাল ধরতে কৃষি কাজের পাশাপাশি হাঁস-মুরগীসহ দেশি-বিদেশি কবুতর পালন শুরু করেন। তবে হাঁস-মুরগীসহ দেশি-বিদেশি কবুতরে আয় কম হওয়ায় বিকল্প কিছু ভাবতে থাকেন। গত ৬ মাস আগে ঢাকার কাঁটাবন এলাকা থেকে পরীক্ষামূলক সুইজারল্যান্ডের অ্যালবিনো প্রজাতির ১০টি সাদা ইঁদুর ৫ হাজার টাকায় কিনে আনেন। এখন তার খামারে এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ শতাধিক।
নাসির উদ্দিন জানান, ইঁদুরগুলোকে দৈনিক স্বাভাবিক খামারের মধ্যে গম, ভুট্টা, ধান, দেওয়া হয়। ৪০ দিন পরপর ৮ থেকে ১৫টি করে বাচ্চা দেয় এই জাতের ইঁদুর। দৈনিক খাবার বাবদ খরচ হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যাল ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে আসছে অর্ডার। বর্তমানে বড় আকারের একটি ইঁদুর ৫০০-৬০০ টাকায় বিক্রি করছেন। আমার এই খামারে যে পরিমাণ ইঁদুর রয়েছে তার চাইতে কয়েকগুণ বেশি চাহিদা থাকায় ক্রেতাদেরকে দিতে পারছি না।
তিনি জানান, শুরুতে নাসিরের এই পদক্ষেপকে এলাকাবাসী ভালোভাবে না নিলেও এখন দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে। অনেকেই ঝুঁকছেন ইঁদুর লালন-পালনে। ছোট একটি খামার থেকে প্রতিমাসে ৩০/৩৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। প্রয়োজনীয় সহায়তা পেলে বাণিজ্যিক ভাবে খামার স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানালেন এই সৌখিন খামারী।
ল্যাবরেটরী এনিমেল হিসাবে এসব মাইস বা গিনিপিক রোগ নির্নয় সহ পরীক্ষমূলক ভ্যাকসিন প্রয়োগের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হবার কথা জানালেন, মোস্তফা কামাল জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা।
ইঁদুরের খামার করতে আগ্রহীদের সরকারীভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তুলতে পারলে গবেষণা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে এমনটাই প্রত্যাশা সাধারন মানুষের।